বইটি সম্পর্কে


“যে তার সত্তাকে অবগত হলো সে তার রবকে জানলো।”
-নবী মুহাম্মদ (সা.)

আপন সত্তাকে জ্ঞাত হবার মাধ্যমেই মহান আল্লাহর পরিচয় পাওয়া যায়। নবী (সা.) এর এই বাণীর উপর ভিত্তি করে এই বইটি রচিত হয়েছে।

নবী (সা.) এর বাণীকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আপন সত্তাকে জানলে জানা যাবে আমাদের এই মহাবিশ্বের প্রকৃত রহস্য। “সমস্ত বস্তুই ধ্বংসশীল কেবল তাঁর চেহারা ব্যতীত”কুরআনের এই বাণীকে বোঝা যাবে।

সত্যিকারের অস্তিত্ব যে কেবল আল্লাহরই এবং আমাদের তথা মহাবিশ্বের অস্তিত্ব নিছক কল্পনা সেটাই তুলে ধরা হয়েছে এই বইটিতে। আজকের কোয়ান্টাম বিজ্ঞানের এই যুগে এ ব্যাপারটি বোঝা খুব কঠিন হবে না।

আমাদের আপাত দৃশ্যমান অস্তিত্ব একটা কল্পনা ভিন্ন কিছু নয়। আর এই কল্পনাকে বাস্তব হিসেবে তুলে ধরছে আমাদের মস্তিস্ক। চোখ যা দেখে মস্তিস্ক তাকে পরিমার্জন করে সেটাকে দৃশ্যমান বস্তু হিসেবে প্রদর্শন করে। যেটার মাধ্যমে এই জগতকে তার বর্তমান অবস্থায় দেখা যায়।

মস্তিস্কের সীমাবদ্ধ ডিকোডিং বা রূপান্তর-ক্ষমতাকে যখন সাধনা, যিকির, মুশাহাদা, মুরাকাবা এবং অন্যান্য আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত করা যাবে, তখনই সত্যজ্ঞান বা মহান আল্লাহর পরিচয় লাভ করা যাবে। জানা যাবে মহাজাগতিক সত্য। এই বিষয়টি আলোচ্য বইটিতে নানাভাবে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

মূলবইটিতে কোন অনুচ্ছেদ ছিলো না। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে অনুচ্ছেদ যোগ করা হয়েছে। আরবি পরিভাষাগুলোকে টিকাতে উল্লেখ করা হয়েছে।

“চিন্তার সীমানা: ইমাম রাযিকে লেখা ইবনে আরাবীর চিঠি”র পর বাংলাভাষার দ্বিতীয়বারের মতো ‘মেটাকেভ পাবলিকেসন্সে’র তত্ত্বধানে শেখ আল আকরের কোন বই প্রকাশিত হচ্ছে। প্রশংসা মহান আল্লাহর। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ইনশাআল্লাহ তাঁর প্রধান কাজগুলোও বাংলাভাষায় প্রকাশিত হবে।

১ম ই-বুক সংস্করণ: জিলহজ্ব ১৪৩৭ হিজরি/সেপ্টেম্বর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ

প্রকাশনা : মেটাকেভ পাবলিকেশন্স

প্রচ্ছদ : সাদিক মোহাম্মদ আলম

পৃষ্ঠা: 48

মূল্য: ই-বুকটি বিনামূল্যে ডাউনলোড যোগ্য

লেখক সম্পর্কে


মুহিউদ্দিন আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবন আলি ইবন মুহাম্মদ ইবন আল আরাবী আল হাতেমি আত তায়ি। যিনি শেখ আল আকবর নামে পরিচিত। তিনি ইসলামের প্রভাবশালী দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও সুফিদের মধ্যে অন্যতম । তিনি ২৭ রমজান ৫৬ হিজরী/৭ আগষ্ট ১১৬৫ খ্রিষ্টাব্দ সালে মুর্সিয়া, স্পেনে জন্ম গ্রহণ করেন। ৮ বছর বয়সে তার পরিবার সেভিলে চলে যায়। সেখানে তিনি আনুষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ শুরু করেন। ইবনে আরাবী স্পেন এবং উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন শহরে প্রায় ১০ বছর অতিবাহিত করেন বিভিন্ন সুফি সাধকদের সাথে। ৫৯০/১১৯৪ সালে তিনি তার বাড়ি সেভিলে চলে আসেন। ৫৯৮ /১২০২ সালে তিনি তার বিখ্যাত বই ‘ফুতুহাত আল-মক্কিয়া’ লিখা শুরু করেন। ৬২৭/১২২৯ সালে তিনি তার বিখ্যাত এবং তাৎপর্যময় বই ‘ফুসুস আল হিকাম’ রচনা করেন যেটা একটা স্বপ্নের উপর রচিত। ৬৩০/১১৩৩ সালে তিনি ‘ফুতুহাত আল-মক্কিয়া’ রচনা এবং পরিমার্জন শেষ করেন। ২৮ রবিউল সানি ৬৩৮/১৬ নভেম্বর ১২৪০ সালে তিনি সিরিয়ার দামেস্কে কাযি মুহিউদ্দিন ইবন আল জাকির বাড়িতে ইন্তেকাল করেন।

ইবনে আরাবী একজন উচ্চমানের লেখক ছিলেন। তার লিখিত বইয়ের সংখ্যা অনেক। ব্রোকেলম্যান কমবেশ ২৩৯টি কাজের কথা উল্লেখ করেছেন। ৮৪টি বই সন্দেহাতীত ভাবে ইবনে আরাবীর রচিত বা তার দ্বারা সত্যায়িত, এই বিষয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণাতে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার কিছু বিখ্যাত রচনা হলো:- (১) ‘ফুতুহাত আল-মক্কিয়া’: এটি তার বিখ্যাত কর্ম। এটি ৩৭ টি সফরে ৬টি ভাগে, ৫৬০টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এখানে তিনি ইসলামী শরীয়ত, মারিফত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। (২) ‘ফুসুস আল হিকাম’: এটা তার আরেকটি বিখ্যাত বই। তিনি বইটি একটি স্বপ্নের মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (স.) হতে লাভ করেন আর সেভাবেই তিনি তা লিপিবদ্ধ করেন। বইটি ২৭ টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এতে ইবনে আরাবীর সমগ্র শিক্ষার সংক্ষিপ্তসার রয়েছে। (৩) ‘কিতাব আল ইসরা ইলা মাকাম আল আসরা’: এখানে তার তিনটি মিরাজের বিবরণ রয়েছে। (৪) ‘তরজুমান আল আশওয়াক’: এটি তার কবিতার বই যেটা নিজামকে উদ্দেশ্য করে তিনি রচনা করেন। (৫) ‘দাখায়িরুল আলাক’: তরজুমান আল আশওয়াকের একটি ভাষ্য। (৬) ‘রিসালা রুহুল কুদস’: এতে তিনি তার সমকালিম বহু সুফির জীবন ইতিহাস সংকলন করেন। (৭) ‘তানাজজুলাত আল মাওসিলিয়াহ’: এতে তিনি ধর্মীয় রীতি নীতির আধ্মাতিক ব্যাখ্যা দেন। (৮) ‘কিতাব আল আসফার’ (৯) ‘তাজ আর রাসাইল’ এছাড়াও আরো বহু রচনা রয়েছে। এসব কাজের মধ্যে ‘ফুতুহাত আল-মক্কিয়া’ এবং ‘ফুসুস আল হিকাম’ বই দুটো তার সমগ্র শিক্ষার ভান্ডার। বই দুটো ইসলামি সুফিতত্ত্বের উপর রচিত অমূল্য রতনস্বরূপ।

মুসলিম ইবনে আরাবীর প্রভাব ব্যাপক। এমন নয় যে সমস্ত মুসলিমরা ইবনে আরাবীকে চেনে এবং সবাই তার শিক্ষাকে মেনে চলছে। বরং ইবনে আরাবীর শিক্ষা বিভিন্নভাবে তার শিষ্য, অনুসারীদের মাধ্যমে সর্বত্র বিস্তৃত হয়। অটোমান তুরস্কে ইবনে আরাবীর সৎ-পুত্র সদরুদ্দিন কুনাভি এবং কুনাভির শিষ্যদের মাধ্যমে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে, অটোমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে “ফুসুস আল হিকাম” পাঠ্যপুস্তকের মর্যাদা পায়। পারস্যে এবং হিন্দুস্থানে ফারসি ভাষার সুফি সাধকদের মাধ্যমে তার শিক্ষা বিস্তৃত হয়; নুরুদ্দিন আল জামি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন। রুমি, হাফিজ, সাদি, জামি, কাসানী, কায়সারী, কুনাভি, শাবিস্তারী, লাহিজি, দারাশিকো, জিলী, ফকরুদ্দিন ইরাকি, আবদুল্লাহ বসনবি, আবদুল গনি নাবুলুসিসহ আরো হাজারো সুফি সাধকদের মধ্যে ইবনে আরাবীর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। আর এদের মাধ্যমেই মুসলিম সমাজে ইবনে আরাবীর চিন্তা-চেতনা বিস্তৃত হয়। অনেকেই তার শিক্ষার বিরোধিতা করেন কিন্তু কোন কিছুই তার প্রভাবকে অতিক্রম করতে পারে নি। তিনি তার স্থানে আজো রয়ে গেছেন শেখ আল আকবর হিসেবে।

অনুবাদকপরিচিতিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে শিক্ষা গ্রহন শেষ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সুফিসাহিত্যের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ থাকায় বিভিন্ন সুফিসাধক বিশেষ করে ইবনে আরাবীকে অধ্যয়ন করছেন এবং এর পাশাপাশি অনুবাদের কাজ করেন। বর্তমানে মেটাকেভ পাবলিকেসন্সের সাথে জড়িত রয়েছেন।

ইবনে আরাবীর বাণী



যোগাযোগ


মন্তব্য বা যোগাযোগের জন্য অনুগ্রহ করে নীচের ফর্মটি পুরন করুন

MetaKave Publications

Web Experience by MetaKave

© 2016 MetaKave Publications | Template by WowThemes.net