এই পুস্তিকাটি মূলত শেখ আল-আকবর মুহিউদ্দিন ইবনে আরাবী আল হাতেমীর (১১৬৫ মুর্সিয়া, স্পেন - ১২৪০ দামেস্ক, সিরিয়া) লিখিত একটি পত্রের (রিসালা ইলা ইমাম রাযি) বাংলা অনুবাদ। যেটি বিখ্যাত দাশর্নিক, ধর্মতত্ত্ববিদ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী ইমাম ফখরুদ্দিন আর রাযির নিকট লেখা হয়েছিল। চিন্তা ও গবেষণার চূড়ান্ত ধাপে মানুষ যতোই উন্নীত হোক না কেন, যতক্ষণ না সে তার নিজ-সত্তাকে সত্যিকারভাবে অবগত হচ্ছে, ততক্ষণ সে দিশেহারাভাবে এদিক-ওদিক ঘুরতে থাকবে। নিজ-সত্তাকে জানার মাধ্যমেই আপনাকে পরম-সত্যের বা মহামহিম আল্লাহর তত্ত্বজ্ঞান লাভ করতে হবে। এই পথটি চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে পাড়ি দেওয়া যাবে না। কেননা তা চিন্তা-গবেষণা, যুক্তির বহু-উর্দ্ধে।
কিন্তু বহু জ্ঞানী-গুণীজন এই ভুলটি করে থাকেন। তারা ভাবেন চিন্তা-গবেষণা, যুক্তির মাধ্যমে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। চিন্তা-গবেষণা, যুক্তিই তাদেরকে আল্লাহর কাছে নিয়ে যাবে, ফলে তারা নিজেদের সমস্তটুকু উজাড় করে দেন কিন্তু শেষমেশ দিশেহারাভাবে এদিক-ওদিক পথ হাতড়াতে থাকেন। এই নাজুক বিষয়টিকে বুল্লেহ শাহ তার কবিতায় বেশ সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।
পড় পড় আলিম ফাযিল হয়ো
কাদি আপনে আপনু পড়িয়াই নেই
পড়ে পড়ে আলেম হও জ্ঞানী হও
কিন্তু কখনো তো নিজেকে পড়লে না
এই ব্যাপারটি ঘটেছিল ইমাম রাযির ক্ষেত্রে। তিনি ত্রিশ বছর ধরে চিন্তা-গবেষণা, যুক্তির মাধ্যমে যে অনুসিদ্ধান্তে পৌছে ছিলেন এক নিমেষেই আরেকটি যুক্তি এসে তার ভিত্তি নড়িয়ে দেয়। আর তিনি এই ব্যাপারেও সন্দিহান যে, নতুন অনুসিদ্ধান্তটিকে না আবার আরেকটি প্রমাণ এসে উড়িয়ে দেয়। দিশেহারা হয়ে তিনি একসময় কাঁদতে আরম্ভ করেন। যে দৃশ্যটি তাঁর সাথীরা অবলোকন করে এবং তাদের মধ্যেকার একজন পুরো বিষয়টি ইবনে আরাবীকে অবহিত করে। তাই ইমাম রাযিকে উপদেশস্বরূপ তিনি এই পত্রটি লিখেন। এই পত্রটিতে চিন্তা-গবেষণা, যুক্তির সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হয়েছে এবং কিছু আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সংক্ষেপ হলেও প্রতিটি লাইন খুবই তাৎপর্যময়।
অনুবাদের জন্যে লেবাননের বৈরুতের দারুল-কুতুব ইলমিয়াহ হতে ২০০১ সালে প্রকাশিত ‘রাসাইলে ইবনে আরাবী’র প্রথম সংস্করণ ব্যবহৃত হয়েছে। এটি মূলত ভারতের হায়দারবাদের ‘দায়িরাতুল মাআরিফ আল উসমানিয়া’ প্রকাশনা কর্তৃক প্রকাশিত ‘রাসাইলে ইবনে আরাবী’নামক বিখ্যাত সংস্করণের প্রতিলিপি।
মূল বইটিতে কোন অনুচ্ছেদ ছিলো না। পাঠকের সুবিধার্থে অনুচ্ছেদ যোগ করা হয়েছে। টিকাতে আরবি শব্দগুলোকে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় ইবনে আরাবীর কোন বই অনুদিত হয়েছে কিনা, সে ব্যাপারটি প্রশ্নসাপেক্ষ। যেটা আসলে আমাদের জন্যে দুর্ভাগ্যের। আমাদের বাংলা ভাষায় তাঁর লেখাসমূহ অনুদিত হওয়া খুবই জরুরী। বিশেষ করে আজকের এই আধুনিক যুগে তো তা আরোও বেশি প্রয়োজনীয়। সে বিষয়টিকে সামনে রেখেই এ বিনিত প্রচেষ্টা।
১ম ই-বুক সংস্করণ: জিলহজ্ব ১৪৩৭ হিজরি/সেপ্টেম্বর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ
প্রকাশনা : মেটাকেভ পাবলিকেশন্স
প্রচ্ছদ : সাদিক মোহাম্মদ আলম
পৃষ্ঠা: ২৫
মূল্য: ই-বুকটি বিনামূল্যে ডাউনলোড যোগ্য
মন্তব্য বা যোগাযোগের জন্য অনুগ্রহ করে নীচের ফর্মটি পুরন করুন
Web Experience by MetaKave